মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার-সম্পর্কে বিস্তারিত
আপনি কি মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য। মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতার সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। মিষ্টি কুমড়ায় আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম, আয়রন ইত্যাদি।
আপনি যদি মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনি মিষ্টি কুমড়ার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে নিচের দিকে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা
এখন আমরা মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। মিষ্টি কুমড়ার দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর। মিষ্টি কুমড়ারকে আমরা তরকারি হিসাবে রান্না করে খায় এবং ভর্তা করেও খেয়ে থাকি। মিষ্টি কুমড়ার আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম,আয়রন ইত্যাদি উপাদান। মিষ্টি কুমড়ার খাওয়া ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কি কি উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনেনি
- হাই প্রেসার কমায়ঃ মিষ্টি কুমড়ার খাওয়া ফলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখে। কারণ মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। মিষ্টি কুমড়ায় পটাশিয়াম থাকার কারণে শরীরে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে রাখে। তাই যাদের হাই প্রেসার বেশি থাকে তারা নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করবে।
- হজমের সাহায্য করেঃ মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কারন মিষ্টি কুমড়ায় আছে প্রচুর পরিমাণে আশঁ এবং ফাইবার। যা আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং মিষ্টি কুমড়া খাওয়া ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও দূর করে।
- চোখ ভালো রাখেঃ মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ এবং বিটাক্যারোটিন। যা আমাদের চোখের জন্য খুবি উপকারী। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে চোখের রেটিনার যেকোন সমস্যা দূর করে। আমাদের শরীরের যদি ভিটামিন-এ এর ঘাটতি থাকে সেটাও পূরন করে মিষ্টি কুমড়ায়।
- বয়সের ছাপ কমায়ঃ মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক এবং আলফা হাইড্রক্সাইড। যা আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম ভালো রাখে। এর পাশাপাশি অস্ট্রিপোরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। মিষ্টি কুমড়া নিয়মিত খেলে বয়সের ছাপ কমায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই এবং অ্যান্টিঅক্সডেন্ট।যা আমাদের শরীরের ক্যান্সার ও আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। তাই নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খাওয়া ফলে আমাদের শরীরের অনেক ধরনের ঘাটতি পূরন করে থাকে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে আমাদের শরীরের নিয়মিত ইনসুলিন সরবরাহ করে থাকে। মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা আমাদের রক্তের চিনির পরিমান নিয়ন্ত্রণ করে। মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে ক্ষতিকর অক্সিডেটিভ চাপ কমায়।
- ত্বক উজ্জ্বল করেঃ নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। কারন মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি। ভিটামিন এ এবং সি আমাদের শরীরের ত্বক উজ্জ্বলের জন্য অনেক ভুমিকা পালন করে।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়া রা্ন্না করার সময় আমরা তার বিচি তরকারির আর্বজনা হিসাবে ফেলেদি আমরা কিন্তু এর উপকারিতার সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং আরো অন্যন্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাওয়ার ফলে ক্যান্সারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং প্রোস্টেড ও ব্লাডারের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
১০০গ্রাম মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে ২৯.৮৪গ্রাম প্রোটিন। ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসে যে পরিমান প্রোটিন পাওয়া যায়। তাহলে মিষ্টি কুমড়ার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা আপনি সেটা নিজেই বুঝতে পারছেন। তাই আমরা নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এবং এর পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়ার বিচি তাও খেতে হবে। কারন মিষ্টি কুমড়ার বিচি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি একটা জিনিস।
মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুন
মিষ্টি কুমড়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি একটা সবজি। মিষ্টি কুমড়া খেলে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, বয়সে ছাপ কমায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই রকম নানান সমস্যা দূর করে থাকে মিষ্টি কুমড়া। কারণ মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুন রয়েছে।
তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রত্যেটি মানুষকে মিষ্টি কুমড়া খাদ্য তালিকায় রাখা উচিৎ। মিষ্টি কুমড়া ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে এবং অনেক ধরনের নানান জটিলতার সমস্যা দূর করে। মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি তার বিচিও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। চলুন জেনেনি মিষ্টি কুমড়ায় কি কি পুষ্টি গুন উপাদান রয়েছে।
- ভিটামিন-এ
- ভিটামিন-ই
- ফাইবার
- পটাশিয়াম
- ম্যাঙ্গানিজ
- আয়রন
- ক্যালসিয়াম
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি এলার্জি হয়
এলার্জি নেই এমন মানুষ এখন কমি আছে। অনেকই এখন এলার্জি নিয়ে ভয়ের মধ্যে আছে। এলার্জি কারনে শরীরের জন্য অনেক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন গরুর মাংস,বেগুন,মাছ পুইশাক,দুধ ইত্যাদি। এই ধরনের খাবারে ফলে এলার্জি অনেকটা বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া খেলেও এলার্জি হয়ে থাকে। তবে হ্যাঁ, মিষ্টি কুমড়াতে এলার্জি আছে।
কিন্তু মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে এলার্জি হচ্ছে কি না সেটা আগে দেখতে হবে। তার জন্য আগে আপনাকে মিষ্টি কুমড়া খেয়ে দেখতে হবে। যদি খাওয়ার পরে এলার্জি কোন ধরনের সমস্যা করে না তাহলে নিশ্চিন্তে মিষ্টি কুমড়া খেতে পারেন। আর মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে যদি এলার্জি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনার জন্য মিষ্টি কুমড়া না খাওয়ায় ভালো।
কারণ এলার্জি জন্য আমাদের শরীরের জন্য অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যদি আপনার এলার্জি সমস্যা থাকে তাহলে অতিদ্রুত ডাক্তারে পরামর্শ গ্রহণ করুন।
মিষ্টি কুমড়ার শাকের উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ায় যেমন পুষ্টিগুন উপাদানে ভরপুুর তেমনি তার পুষ্টি গুনও কম না। অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রতিসপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন মিষ্টি কুমড়ার শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। মিষ্টি কুমড়ার শাক খেলে আমরা কি কি উপকার পেতে পারি তা নিচে দেওয়া হলোঃ
- আয়রনের ঘাটতি পূরন করেঃ মিষ্টি কুমড়া শাকে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে রক্তের কোন অভাব দেখা দেয়না। আয়রনে ঘাটতি নারী এবং শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা দেয় তাই তারাকে বেশি বেশি মিষ্টি কুমড়ার শাক খাওয়া ভালো।
- হার্ট ভালো রাখেঃ মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণ খাদ্য আশঁ আছে। যা উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল শোষন কমায় এবং পিত্ত,এ্যাসিডের শোষণও হ্রাস করে। ফলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমায়। কোলেস্টেরলকে কমিয়ে হার্টকে শক্তিশালী করে।
- দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করেঃ দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য আপনি সপ্তাহে ২ বা ৩ দিন মিষ্টি কুমড়া শাক খেতে পারেন। এছাড়াও আপনার চোখের ছানি প্রতিরোধ করতে মিষ্টি কুমড়ার শাক ভুমিকা পালন করবে।
- স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়ঃ মিষ্টি কুমড়ার শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা হার্টের অনিয়মিত বিট রোগ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
- দাঁত ও হাড় মজবুত করেঃ মিষ্টি কুমড়ার শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যা দাঁত ও হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।
- ক্ষত সারাতে সাহায্য করেঃ মিষ্টি কুমড়ার শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি। এটি খাওয়ার ফলে ক্ষত জায়গা সারাতে অনেক কার্যকরী ভুমিকা পালন করে
মিষ্টি কুমড়ার জুসের উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার যেমন রান্না করে খাওয়া হয় তেমনি এর জুসোও খাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়ার জুস খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। মিষ্টি কুমড়ার জুস বানানো হচ্ছে, মিষ্টি কুমড়াকে আগে টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে। তার পরে ব্লেন্ডারে মধ্যে দিয়ে একটু পানি দিয়ে জুস বানিয়ে নিন। জুস বানানো হয়ে গেলে এটিকে চিনি বা মধু দিয়ে খেতে পারেন।
মিষ্টি কুমড়ায় ক্যালরির পরিমান কম রয়েছে। ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়াতে ২৬ গ্রাম ক্যালরি রয়েছে। মিষ্টি কুমড়ার জুস খেলে শরীরে বাড়তি ক্যালরি জমা হতে বাধা দেয়। মিষ্টি কুমড়ার জুসে থাকা ভিটামিন-সি ও বিটা ক্যারোটিন যে কোন ধরনে প্রদাহ কমায়। সাধারণ ব্যায়ামের পরে মিষ্টি কুমড়ার জুস খেলে ক্লান্ত দূর করে। জুস খাওয়ার ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
আপনি যদি ঘুমানোর আগে মিষ্টি কুমড়ার জুস খান তাহলে ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করবে।
মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতার
আপনি মিষ্টি কুমড়া খাচ্ছে কিন্তু এর অপকারিতার সম্পর্কে জানেন কি। যদি না জানেন তাহলে এই পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। যে জিনিসের উপকার বেশি তার কিছু ক্ষতি কারক দিকো থাকে। মিষ্টি কুমড়া হচ্ছে পুষ্টিগুন উপাদানে ভরপুর কিন্তু মিষ্টি কুমড়া অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ক্ষতিও হতে পারে। অতিরিক্ত মাত্রায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে রক্তচাপ অনেকটা কমে যেতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি করতে পারে,শর্করা মাত্রা কমে যেতে পারে এবং এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। মিষ্টি কুমড়ায় যেমন উপকার রয়েছে তেমনি অপকারও রয়েছে। তাই আমাদের অতিরিক্ত মাত্রায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়া যাবেনা। অতিরিক্ত মাত্রায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকার। তাই কোন কিছু খাওয়ার আগে আমাদের তার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে তার পরে খেতে হবে তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
লেখকের মন্তব্যঃ মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার
আজকে আমরা মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার সম্পর্কে আলোচনা করলাম। মিষ্টি কুমড়া হচ্ছে পুষ্টি উপাদান ও আশঁ যুক্ত খাদ্য। মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। কিন্তু মিষ্টি কুমড়া অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে এর কিছু ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতার খুটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
আপনি যদি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে মিষ্টি কুমড়ার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনি উপকিত হবেন। আর্টিকেল টি পড়ে যদি আপনাকে ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধ ও আত্মীয় সজনের কাছে শেয়ার করে দিবেন তাহলে তারাও উপকিত হবে। ধন্যবাদ
স্মার্ট এনবি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url