কাঁটা নটে শাকের উপকারিতা

শাক-সবজির দেশ বাংলাদেশ। এই দেশের বন বাগানের, নদী পাড়ে,রাস্তা ধারে নানা ধরনের শাক পাওয়া যায়। তবে পুষ্টিগুনে এই শাক অন্য সব শাকের চেয়ে মোটেও পিছিয়ে নেই।পুষ্টি বিদরা বলছে,কাটা নটে শাক যেমনি পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ তেমন ভেষজ গুণ সম্পন্ন। 

সুচিপত্রঃ


কাটা নটে শাক সাধারণত বাজারে দুই ধরনের পাওয়া যায়। একটা হলো সবুজ নটে শাক আর একটা হলো লাল নটে শাক। কাঁটা নটের গাছের শিকর ও পাতা নানান রোগের ওষুধ হিসাবে খাওয়া হয়।সবুজ নটে শাকের চেয়ে লাল নটে শাকের বেশি উপকারি। কাঁটা নটের শাকে আর কি কি পুষ্টি উপাদান আছে,তার সম্পর্কে জানতে  চাচ্ছে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। বিস্তারিত জানতে নিচের দিক পড়ুন

পুষ্টিগুন ও ভিটামিন 

কাঁটা নটের শাকে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেমন: প্রোটিন, ভিটামিন-এ ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন -সি, ভিটামিন -কে, থায়ামিন,  রিভাফ্লাভিন, নিয়াসিন, প্যানটোথেনিক এসিড। খনিজ উপাদানের মধ্যে রয়েছে,  ক্যালসিয়াম, আইরন, ম্যানেসিয়াম, ফসফরাস,  পটাসিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক, কপার,ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, হিস্টিডিন, আইসোলিউসিন, লাইসিন, ট্রিপটোফেন ইত্যাদি।

কাঁটা নটের গাছের বংশ বিস্তার 

আমরা জানি,কাঁটা নটের গাছের  বিস্তার ঘটে বীজের মধ্যে বংশবিস্তার হয়ে থাকে।বর্ষার শেষে কাঁটা নটের গাছের ফুল ফোটে এবং আশ্বিন মাসে ফল ধরে।পতিত জমি ও ক্ষেতের আইলে নিজে থেকে জন্মে থাকে কাঁটা নটের গাছ। এমনকি শাক-সবজির ক্ষেতে ও দেখতে পাওয়া যায় এই গাছ।কাঁটা নটের গাছকে কাটিং এর মাধ্যমেও বংশবিস্তার করা যায়।

কাঁটা নটের গাছের কি কি অসুখ ভালো হয়

আমরা জানি যে, কাঁটা নটের গাছ অনেক উপকারি ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কাঁটা নটের গাছের শাকে ও মূলে কি কি রোগ ভালো হয়। তা বিস্তারিত জানতে নিচে চোখ রাখুন।

১. সর্দি: ঋতুগত কারণে নাক দিয়ে ঝরঝর করে পানি ঝড়া ও মাথা ভার হওয়া, এই গুলো হলো সর্দির উপসর্গ। এই উপসর্গ দেখা দিলে কাঁটা নটের মূল থেতো করে বা বেটে, নিংড়ে সেই রসটাকে অল্প করে গরম করে দিনে ২-৩বার ২চামচ করে খেতে হবে।সর্দি যদি গাঢ় হয়ে লেগে থাকে তাহলে সেটা পাতলা হয়ে বেড়িয়ে যাবে।আর সর্দি যদি পাতলাও থাকে সেটাও বেড়িয়ে যাবে।

২.রক্তস্রাব বন্ধ : নটের শাকের মুল বা শিকড় পিষে নিয়ে তার সঙ্গে ভাতের ফ্যান মিশিয়ে খেলে প্রসূতির মহিলাদের রক্তস্রাব বন্ধ হয়।যদি কোন কারনে যে মেয়ের বাচ্চা হবে তার রক্তস্রাব আরম্ভ হয় এবং বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়।তাহলে কাঁটা নটের শাকের শিকড় বাটার সঙ্গে ভাতের ফ্যান মিশিয়ে খেলে গর্ভ স্থির হয় এবং অজাত শিশ বা ভূণ নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।

৩.রক্তের দোষ দূর করে: যদি শরীর গরম হওয়া বা যে কেন কারণে রক্তের দোষ ঘটে এবং সেই কারণে চুলকুনি হয় তাহলে নিয়মিত নটের শাক ভাজা খেলা সেটার উপকার পাওয়া যায়।কুষ্ঠ, শরীর জ্বালা,লিভার ও পিত্তের অসুখের নটের শাক উপকার দেয়।

৪.গ্রীষ্মকালীন রোগ: গরম কালে নিয়মিত নটের শাক ভাজা খেলে অনেক রোগ সেড়ে যায়।এছাড়াও যারা অসুস্থ তাদেরও নটের শাক খাওয়ানো যেতে পারে কারণ নটের শাকের খেলে কোন অপকার হবে না। যদি সম্ভব হয় গরমকালে ও বর্ষা কালে অর্থাৎ নটরে শাক যখন বাজারে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। তখন নিয়ম করে প্রতিদিন ভাতের সঙ্গে নটের শাক ভাজা খেলে অনেক রোগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবেন।তা ছাড়া সব রকম বিষয়ে ক্রিয়া নাশের পক্ষেই নটের শাক হলসব চেয়ে সুলভ,সস্তা, সহজ ও অব্যর্থ ওষুধ। 

৫. যৌন সমস্যা দূর করে: কাঁটা নটে শাকের গাছে মূল নিয়মিত খেলে মানুষের যৌন সমস্যা দূর করে। কাঁটা নটে শাকের মূল হাতের আঙ্গুলের পরিমান করে কেটে নিতে হবে।তারপরে ভালোভাবে ধুয়ে এক চামচ মধুর খেতে হবে।কয়েকদিন নিয়মিত সকালে খালি পেটে খেলে খুব সহজেই যৌন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

৬. পোড়া ও ক্ষত ভালো করে: কাঁটা নটে শাকের গাছের মূল পোড়া ও ক্ষত স্থানে লাগালে সেটা তাড়াতাড়ি ভালো হয়।১০ থেকে ১৫ গ্রাম কাঁটা নটে গাছের টাটকা মূল এবং ২০ গ্রাম পাতা কোন মাটি বা স্টিলের পাত্রে রেখে ১০০ মিলিলিটার পানি দিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে নিতে হবে।পানি ঠান্ডা হলে পরিস্কার পাতলা কাপড় দিয়ে ছেকে নিতে হবে। ছাকা হয়ে গেলে সেগুলো কে পোড়া বা ক্ষত স্থানে ভালো করে লাগাতে হবে।এই ভাবে কয়েক দিন লাগালে দূরত্ব পোড়া ও ক্ষত স্থান শুকিয়ে যাবে।

৭. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ হলো একটা মারাত্মক সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে কাঁটা নটে শাকের গাছ অনেক ভুমিকা রাখে।কারন কাঁটা নটে শাকে প্রচুর পরিমাণ খাদ্য আশঁ আছে।তাই নিয়মিত কাঁটা নটে শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে।

৮.দাঁত ভালো রাখে: ভিটামিন সি,ক্যালসিয়াম ও আয়রন এর অভাবে দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় দেখা দেয়। কিন্তু নিয়মিত কাঁটা নটে শাক খেলে দাঁত ও হাড় ভালো রাখে।কারন কাঁটা নটের শাকে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন রয়েছে। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্মার্ট এনবি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url